রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ আওয়ামী লীগের এমপি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ২টি গ্রামে আরাকান আর্মির হামলা ‘কিরগিজস্তানকে আমাদের গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি, কোনো বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়নি’ কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন অটোরিকশা চালকদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের র‌্যালি থেকে ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থী বেড়েছে ৩ গুণ, ঋণগ্রস্ত এক-চতুর্থাংশ: টিআইবি সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার শহীদ ২ দিনের রিমান্ডে ‘গ্লোবাল ডিসরাপ্টর্স’ তালিকায় দীপিকা, স্ত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রণবীর খরচ বাঁচাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
নারী উদ্যোক্তাদের বিনাসুদে ঋণ প্রদাণসহ ৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা জায়েদার

নারী উদ্যোক্তাদের বিনাসুদে ঋণ প্রদাণসহ ৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা জায়েদার

স্বদেশ ডেস্ক:

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচিত হতে পারলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নগরবাসীর হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ, নারী উদ্যোক্তাদের বিনা সুদে ঋণ, আউটার রিং রোড নির্মাণ, পর্যাপ্ত সংযোগ ব্রিজ নির্মাণ, যাতায়াতের একাধিক বিকল্প রাস্তা তৈরি, গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ফ্লাইওভার, ইউপাশ, ইউলুপ নির্মাণ, নিরাপদ সড়ক ও নিরাপদ যাতায়াতের জন্য ফুটওভার ব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ, বর্জ্যে ব্যবস্থাপনার স্থায়ী সমাধানের কথা জানিয়ে ৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সিটি নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন।

মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে নগরীর ছয়দানা এলাকায় তার নিজ বাসভবনে ওই ইশতেহার ঘোষণা করেন তার নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ইশতেহার ঘোষণা না করলেও ইশতেহার ঘোষণাকালে তার মা জাহাঙ্গীর আলমের পাশেই বসে ছিলেন।

তিনি তার ইশতেহারে উল্লেখ করেন, হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ও স্মার্ট সিটি স্থাপন সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরের হোল্ডিং ট্যাক্স আগামী পাঁচ বছরের জন্য মওকুফ করা হবে। হোল্ডিং অনুযায়ী বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে ডিজিটাল হোল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়ন করব এবং স্মার্ট হোল্ডিং কার্ড প্রদান করা হবে। এতে করে নাগরিকগণ অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে পারবে। যেদিন আবেদন করা হবে সেদিনই ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের জন্য ই-ট্রেড লাইসেন্স চালু করব। এতে করে নাগরিকরা অনলাইনে লাইসেন্সের আবেদন এবং নবায়ন করতে পারবেন।

সিটির বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে ইশতেহারে জায়েদা খাতুন উল্লেখ করেন, আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের পরিকল্পনা ও তার প্রণীত মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রয়োজন অনুযায়ী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ করব। সিটি করপোরেশন এলাকা রাজেন্দ্রপুর থেকে শুরু করে টঙ্গী হয়ে আশুলিয়া, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর কাউলতিয়াকে সংযুক্ত করে আউটার রিং রোড নির্মাণ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত সংযোগ ব্রিজ নির্মাণ করে যাতায়াতের একাধিক বিকল্প রাস্তা তৈরি, গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্লাইওভার, ইউপাশ, ইউলুপ নির্মাণ, নিরাপদ সড়ক ও নিরাপদ যাতায়াতের জন্য ফুট ওভার, জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ ও সরকারের অন্যান্য দফতরের সাথে সমন্বয় করে যানজট সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে। এছাড়াও অত্যাধুনিক যাত্রী ছাউনি নির্মাণ, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থার পাশাপাশি নগরীতে চলাচলের জন্য অত্যাধুনিক চক্রাকার এসি বাস সার্ভিস চালুকরণ করা হবে যাতে নগরবাসী ও সহজে ও নিরাপদে চলাচল করতে পারে। সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন সড়কের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে রাস্তা নামকরণ করা হবে।

সিটি করপোরেশনের সেবা সহজ করার জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন নাগরিক সেবা, যেমন- জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, চারিত্রিক সনদ, প্রত্যয়ন পর ডিজিটালাইজড করা হবে। এতে করে নাগরিকগণ ঘরে বসে অনলাইনেই এই সব সেবা পাবে। এছাড়াও সার্বক্ষণিক সাধারণ জনগণের সাথে যোগাযোগ সহজতর করতে ‘কল টু মেয়র’ অ্যাপস চালু করা হবে। শিল্পকারখানার মালিকদের ট্যাক্সের হার এক শতাংশ করবেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক জমি অধিগ্রহণ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ড স্থাপন করা হবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে গার্বেজ ডিস্পোজাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। প্রতি ওয়ার্ডে সোলার এলইডি স্থাপন, প্রতি রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, রাতের নিরাপত্তার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক নাইট গার্ড নিয়োগ দেয়া হবে। মহানগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য নগরীতে অত্যাধুনিক চারটি স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, এছাড়াও ৫৭টি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশন কর্তৃক পরিচালিত মিনি কমিউনিটি ক্লিনিক-হসপিটাল স্থাপন করা হবে। এতে করে নগরবাসী হাতের নাগালে সু-চিকিৎসা পাবে। ছোটখাটো রোগের চিকিৎসার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক ফ্যামিলি ডাক্তার এবং হোমিও ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হবে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় জোন-ওয়ার্ডভিত্তিক মডেল মসজিদ তৈরি করে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ও ইসলামিক পাঠাগার চালু করা হবে। সিটি করপোরেশন আওতাভুক্ত সকল মসজিদের ইমাম, খতিবগণকে মাসিক সম্মানি ভাতা প্রদান করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন কবরস্থান নির্মাণ করা হবে। মহিলাদের নামাহ জামাতের সাথে আদায় এবং ধর্ম-কর্ম পালনের জন্য বিশেষায়িত মসজিদ নির্মাণ করা হবে। বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে এবং তাবলিগ জামাতের সকল মুরব্বিদের সাথে পরামর্শক্রমে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের অবকাঠামতগত উন্নয়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান করে কাজ করা হবে। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় উপাসনালয় সংস্কার ও প্রতিস্থাপনে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহন করে কাজ করার কথা বলেন।

সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রাথমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগের পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সিটি করপোরেশন থেকে বিশেষ ভাতা দেয়া হবে। নারীদের স্বাবলম্বী করতে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নালীদের কাজের সুযোগ তৈরীর পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিনাসুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দিবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, ইনডোর প্লে গ্রাউন্ড স্থাপন, আধুনিক কনভেনশন সেন্টার, অডিটরিয়াম, আধুনিক পার্কিংসহ সিটি করপোরেশন অত্যাধুনিক বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হবে।

সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরত শ্রমিকদের তথ্য নিয়ে ডিজিটাল ডাটাবেইজ প্রণয়ণ করা হবে। এতে শ্রমিকদের বিস্তারিত তথ্য লিপিবদ্ধ তাদের সুচিকিৎসার জন্য সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন করা হবে, সেখানে তারা নামমাত্র মূল্যে শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা হবে।

অসহায় ও কর্মহীন শ্রমিকদের বিশেষ প্রণোদনা সহায়তা, কর্মজীবী মায়েদের সন্তানদের দেখাশোনা, কর্মজীবী নারীদের স্বল্প খরচে থাকার সুবিধা ডে-কেয়ার ও হোস্টেলের ব্যবস্থা করা হবে।

মাদক ও সন্ত্রাসের নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, সড়ক মহাসড়কে চাঁদাবাজী বন্ধ, মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন, ওয়ার্ডভিত্তিক সন্ত্রাসবিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন, নগরের বস্তিবাসীদের জন্য বহুতল ভবনে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করে তাদের পুনর্বাসন, বয়স্ক ও অসহায় পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন, সিটি করপোরেশনে কর্মরত সবার জবাবদিহিতার মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্লিন সিটি ও গ্রিন সিটি বাস্তবায়নে বৃক্ষরোপণ, বেকারদের জন্য পার্টটাইম কাজের সুযোগ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877